গল্প

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ২৩

মিমি মুসকান

হঠাৎ উনি একটা প্যাকেট আমার সামনে রাখলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম..
কি এটা?
নিজেই দেখো!

আমি প্যাকেট খুলে দেখি একটা স্মার্টফোন। এরকম কিছু’র আশা করি নি। তবুও এটা দেখে আমার মুখে হাসি ফুটল। উনি আমাকে বলল..
পছন্দ হয়েছে!
হুম খুব সুন্দর! কিন্তু আমি তো চালাতে পারি না।
প্রথম প্রথম কেউই পারে আস্তে আস্তে শিখে তুমি ও শিখবে।
হুম জানি আর expert তো আমার সামনেই দাঁড়ানো।
দুজনেই এক সাথে হাসলাম। উনি বলে উঠল…
জানো খুব চিন্তিত ছিলাম‌‌, তোমার পছন্দ হবে কি না। আসলে আমি ভেবেই পাচ্ছিলাম কি দেবো তোমায় পরে এটার কথাই কেন জানি মনে পড়ল আমার।
কেন কখনো কোনো মেয়ের জন্য গিফট কিনেন নি।
হ্যাঁ last time মা’র জন্য একটা শাড়ি কিনেছিলাম!

আর আপু!

ওকে খুশি করার জন্য একগাদা চকলেট’ই যথেষ্ট। সেটা দিলেই ও খুশিতে নাচতে থাকবে। কিন্তু জানো আমি ইচ্ছে করেই তোমার জন্য চকলেট আনি নি!
কেন?
তুমি যেই! মাঝে মাঝে তোমাকে কোলে নিতে হয়, চকলেট খেয়ে তখন ওজন বেড়ে গেলে সমস্যা!
কিহহহ?
হ্যাঁ!
আচ্ছা আমি এখন ঘুমাবো গুড নাইট!
শুয়ে পড়লাম আবারও। মনে হচ্ছে এবার ভাগ্য ভালো কারন উনি আমাকে আর ডেকে তুলেন নি। চলে গেল! কেন জানি খারাপ লাগছিলো। উনি এতো কিছু করলেন আর আমি আবার শুয়ে থাকবো। উঠতে যাবো তাকিয়ে দেখি উনি আমার সামনে দাঁড়ানো। খানিকটা অবাক হলাম। উনার হাতে দু’কাপ চা। আমাকে বলল…
উঠো এই নাও চা!
আমি বানিয়েছেন! কি মনে করো তুমি আমাকে। সামান্য চা বানাতে পারি না নাকি আমি।
হেঁসে বললাম..
সামান্য চা বানাতে পারেন তবে খিচুড়ি নাহ।
উনি রেগে চলে গেলেন। আমি উনার পিছু পিছু গেলাম। বেলকনিতে আসলেন উনি, বেড়ার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়ালেন। আমি দোলনায় গিয়ে বসলাম। উনি এক কাপ চা আমার দিকে ‌ধরলেন। আমি সেটা নিয়ে চুমুক দিয়ে বললাম…

– বাহ বেশ বানিয়েছেন তো আপনি!

দেখলে তোমার থেকেও ভালো বানিয়েছি।
যখন বানাতে পারেন তাহলে আমাকে কখনো বানিয়ে খাওয়ালেন না কেন?
ভালো কিছু সবসময় না পাওয়াই ভালো কথাটা জানো!
ইশ যদি প্রতিদিন আমার জন্মদিন হতো তাহলে নিশ্চিত আপনি আমাকে চা বানিয়ে খাওয়াতেন।
হেসে বললেন…
এটা তোমার মতো বাচ্চা ভূতনি ছাড়া কেউ ভাবতে পারে না।
দুজনের মাঝে কিছু নিরবতা থাকল। উনি চায়ের চুমুক দিচ্ছে আর আকাশের চাঁদের দিকে তাকিয়ে আছে। আর আমি উনাকে দেখছি। আমার জন্মদিন আজ পর্যন্ত কেউ মনে রাখে নি। আর উনি কিভাবে অনায়াসে তা মনে রাখলেন। নিরবতা ভেঙ্গে বলি…
আপনি বার বার আমাকে ঘুম থেকে ডাকলেন কেন?
তুমি যেই ঘুম দাও পরে ডেকে তোলা মুশকিল তাই!
তাই বলে আধা ঘন্টা পর পর! আমার মনে হয় আপনি ঘুমিয়ে পড়তেন তাই!
না আমি একটু নার্ভাস ছিলাম।

– কেন?

এই প্রথমবার কোনো মেয়েকে birthday wish করলাম তাই।
ওহ তো চা বানালেন কেন?
ভাবলাম আজ সারারাত তোমার সাথে গল্প করবো তাই ‌হেসে বলি..
আপনার সাথে আমার ঝগড়া ছাড়া কিছু হবে না। আজ হবে! আর এক কাপ চা খাবা।
আপনি বানাবেন!
নিয়ে আসছি!
আচ্ছা আমি আসছি।
প্রায় চা বানিয়ে কিছুক্ষণ পর আমরা আবার বেলকনিতে এসে দাঁড়াই। উনার তখনকার কথায় আমার জানতে ইচ্ছে করছে উনি কি বলবেন। আমি’ই‌ আগে কৌতুহল নিয়ে জিজ্ঞেস করি..

কি হলো বলুন কি বলবেন!

চা’য়ে চুমুক দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলল…
আকাশ আর ইতি’র ব্যাপারে কথা বলবো।
উনার কথায় রীতিমতো চমকে উঠলাম। একদম বাকরুদ্ধ আমি! কি বলছেন উনি এই এসব। আমি কিছু বলার আগেই উনি আবার জিজ্ঞেস করে…
ইতি’র‌ কি কাউকে পছন্দ!
মাথা নাড়লাম। উনি কপাল কুঁচকে আমাকে জিজ্ঞেস করে…
কাকে?
চোখ বন্ধ করে চয়ের কাপে চুমুক দিয়ে বলি…
আকাশ ভাইয়া কে!
শান্ত ভাবেই বলে..
তাহলে আমার ধারনা ঠিক!
ধারনা ঠিক মানে! কি ধারনা করলেন আপনি।
এই যে ইতি আকাশ কেই পছন্দ করে।
আপনি কিভাবে বুঝলেন?
আকাশ আমায় বললো?

কি বললো?

এই যে ইতি মাঝে মাঝে আকাশ কে কল করে কথা বলে আর ওর হাব ভাব দেখে মনে হচ্ছে কিছু তো গোলমাল আছে।
পছন্দ করা কি গোলমাল!
নাহ ভালোবাসলে মানুষ গোলমাল করে এটা স্বাভাবিক!
ভালোবাসার উপর পিএইচডি করছেন মনে হচ্ছে নাকি অভিজ্ঞতা।
আমার অভিজ্ঞতা নেই তবে পিএইচডি করারও প্রয়োজন নেই এটা দেখলেই বোঝা যায়।
অভিজ্ঞতা নেই কে বললো এতো তাড়াতাড়ি ক্রাশ কে ভুলে গেলেন।
আমার কথায় উনি গরম চা খেতে গিয়ে মুখ পুড়িয়ে ফেলল আমি হাসতে থাকলাম। উনি বললেন…
তুমি পারো বটে? কিসের মধ্যে কি?

( হাসতে থাকি )

ইশ কি হাসি, কতোটা খুশি হয়েছে ভূতনি।
এবার হাসি থামিয়ে জিজ্ঞেস করি…
আচ্ছা এখন আকাশ ভাইয়ার কথা বলুন, উনি কাউকে ভালোবাসে!
হ্যাঁ বাসে!
নিশ্চয়ই টিনা বা আনিকা হবে। ইতি বান্ধবী তোমার কপাল পুড়ল। জিজ্ঞেস করি…
কাকে?
আমার শালি কে!
অবাক হয়ে বলি…
আপনার শালি কে, আর আমার তো কোন বোন নেই!
আছে আছে!
ইতি!
উনি মাথা নাড়লেন। আমি হতবুদ্ধি হয়ে গেলাম। মানে কি বলবো বুঝে উঠতে পারছি না। এতোটা মিল থাকে কিভাবে। ইতি জানলেই নিশ্চিত নাচা শুরু করে দিত এতোক্ষণে। উনি শান্ত গলায় বললেন..

অবাক হলে!
মাথা নাড়লাম।
আমি কিন্তু হয় নি।
কেন?
কারন আমি তোমার মতো বাচ্চা নাহ।
( হেসে )
আমি মুখ ফুলিয়ে চা খেতে থাকি। ভোর অবদি এখানে বসে ছিলাম আমরা। গল্প হয় নি নিশ্চিত তবে ‌ঝগড়া নিশ্চিত হয়েছে। ৫ টার দিকে আমি বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ি ‌, খুব ঘুম পাচ্ছিল।‌ সারারাত ঘুযাই নি বলে। উনিও এসে ঘুমিয়ে পড়ে। প্রায় ঘন্টা তিনেক পর উনি আবারও আমাকে ডেকে তুলেন। আমি ঘুম ঘুম চোখে উনার দিকে তাকিয়ে আছি। দেখি বাইরে যাবার জন্য উনি একবারে রেডি হয়ে আছেন। জ্যাকেট পড়তে পড়তে আমাকে বলল…
তৈরি হয়ে নাও, বেরুতে হবে আমাদের।
হাই তুলতে তুলতে…
কোথায় যাবো আমরা!
গেলেই দেখতে পাবে। আমি বাইরে যাচ্ছি!
উনি চলে গেলেন, অতঃপর আমি আবার কম্বল মুড়ো দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। এখন ঘুম ছাড়া কিছু করতে মন চাইছে না। উনার ইচ্ছে হলে উনি একা যাক।
কিছুক্ষণ পর মনে হলো আমার শরীরে ঠান্ডা পানি পড়ছে। এই শীতের মধ্যে ঠান্ডা পানি আমি লাফিয়ে উঠি!
দেখি গ্লাস নিয়ে উনি দাঁড়িয়ে আছে। সেই লেভেলের একটা ধমক দিলেন আমায়।
আমি কখন জাগিয়ে দিয়ে গেছিলাম আমি, আবার ঘুমালে কেন তুমি!
আমি…আমি!
ধমক দিয়ে… রাখো আমি আমি! উঠো তাড়াতাড়ি করে!
অনেক দিন পর উনার ধমক খেলাম। তাড়াতাড়ি করে উঠে পরলাম। মার খাওয়ার কোনো শখ নেই অবশ্য উনি মারবেন ও না। কিন্তু খুব ভয় করছে। দেখে মনে হচ্ছে আগের স্বভাব ফিরে আসছে। ইশ স্বভাব কেন এতো ক্ষনস্থায়ী। আরেকটু থাকতো ওই স্বভাব টা! আমি তাড়াতাড়ি করে ওয়াসরুম এ চলে গেলাম।

ফ্রেশ হয়ে দরজার উঁকি দিলাম। নাহ উনি রুমে নেই! আমি হাঁপ ছেড়ে বাঁচলাম। মন চাচ্ছে এখন আবার একটু ঘুমিয়ে থাকি। হঠাৎ দেখি বিছানার ওপর একটা শাড়ি! নীল রঙের একটা শাড়ি। শাড়ির ওপর একটা চিরকুট, বেশ কিছু চুড়ি,কানের দুল আর কিছু চকলেট ছিলো! চিরকুট এ লেখা ছিল..
” ভূতনি! শাড়িটা পড়ে বাইরে চলে আসো! খবরদার যদি আবার ঘুমিয়েছো। তাহলে সোজা পুকুরে গিয়ে ফেলবো তোমায়, বুঝলে!”
তার চিরকুট পড়ে হেসে দিলাম। উনি জানতেন আমি আবার ঘুমাতে যাবো। শাড়ি’টা হাতে নিলাম। কোন শাড়ি জানি না, এসব ধারনা আমার নেই। তবে শাড়ি’টায় সূক্ষ্ম কিছু কারুকাজ। দেখে মনে হচ্ছে এখানকার দোকান দেখে কিনেছে কারন কারুকাজ টা স্থানীয়। কিছু নীল রঙের রেশমী চুড়ি, ছোট নীল রঙের ঝুমকো। আমি চকলেট খেতে খেতে শাড়ি পড়তে শুরু করি। সেদিনের ঘটনার পর আমি ঘরে তৈরি হলে উনি আর রুমে আসে না। যদি থাকেও তাহলে বাইরে চলে যান।

এগুলো যে আমার জন্মদিনের উপহার। আয়নায় নিজেকে দেখছি, খুব সুন্দর লাগছে দেখতে। এই প্রথম নিজের স্বামীর কাছ থেকে উপহার পেলাম। ভাবতেই আমার গাল লজ্জায় লাল হয়ে গেলো। চুল গুলো মাঝে সিঁথি করে ছেড়ে দিলাম। চোখে ‌হালকা করেই কাজল দিলাম। আর কিছু না! শীত করছিল তবুও পশমী কাপড় পড়লাম না। কেন জানি ইচ্ছে করছে না। অতঃপর বেরিয়ে আসলাম।
এসে দেখি গাড়ির উনি গাড়ির ওপর আসন পেতে বসে মনের সুখে ফোন টিপছে। আমার চুড়ির আওয়াজে আমার দিকে তাকালেন। আমাকে দেখে হাসলেন না ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলেন। কারন টা আমি বুঝিনি। ভালো লাগছিলো না আমায় নাকি। উনি হুট করেই গাড়ি থেকে নেমে গাড়ির মধ্যে কি জানি খোঁজাখুঁজি করছে। আমি কিছু জিজ্ঞেস করবো দেখি উনি বাইরে এসে আমার কাছে আসলেন। তার হাতে একটা টিপের পাতা। একটা ছোট নীল রঙের টিপ উনি আমার কপালে লাগিয়ে দেন। উনার স্পর্শ আমি খানিকটা ভড়কে গেলাম।

উনি হেসে বলে ওঠে…
প্যাকেটে ছিল হয়তো পড়ে গেছে!
আপনি কাল এইসব কিনেছেন!
কাল কিনেছি কিন্তু অর্ডার আগেই করেছিলাম। কেমন লাগছে আমাকে!
হেসে বললেন….
পুরোই ভূতনি!
উনার হাসি দেখে আমি কিঞ্চিত হাসলাম। উনি গাড়িতে বসতে বললেন। আমি গাড়িতে বসলাম। অতঃপর উনি গাড়ি চালাতে শুরু করেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম কোথায় যাচ্ছি। উনি বললেন…
চা বাগানে!
চা বাগান!হুম সামনেই একটা চা বাগান আছে, মালনিছড়া যে চা বাগান। খুব সুন্দর জায়গাটা।‌ চাইছিলাম একটু সকাল সকাল যাবো কিন্তু তোমার জন্য পারলাম না। কি ঘুমাও তুমি ‌
বেশ করেছি, কাল রাতে আপনার জন্য ঘুমাতে পারি নি। সারারাত ঝগড়া করলেন আমার সাথে আপনি।‌
শুধু কি ঝগড়া করেছি নাকি, কাজের কথাও বলেছি।
হ্যাঁ হ্যাঁ জানি জানি।
এই! কথা দুবার রিপিট করো কেন?
আমার ইচ্ছা আপনার কি?

– কচু!

হি হি হি।
হাসা বন্ধ করো। এখন বলো কি করতে হবে ভেবেছো কিছু!
ভাবার কি আছে, আকাশ ভাইয়া ইতি কে প্রপোজ করে ফেলবে শেষ।
প্রপোজ করা মুখের কথা না বুঝলা।
না বুঝলাম না।
তুমি বুঝবেও না, বাচ্চা রা এতো কিছু বুঝে না।‌
হ্যাঁ আর আপনি তো বুড়ো। আপনি বুঝবেন না তো কে বুঝবে!
তুমি আমাকে বুড়ো বললে… কোন দিক দিয়ে আমাকে তোমার বুড়ো মনে হয়!
মুখ ভেংচি দিয়ে বলি…
নিজেকে খুব হ্যান্ডসাম ভাবেন না। কিন্তু আপনি মোটেও হ্যান্ডসাম নাহ বুঝলেন।- না বাচ্চাদের কথায় এতো কান দেই না আমি ‌
সত্যি কথায় কেউ দেয়ও না।
ঝগড়া করো না তো!
এটাই ঝগড়া করিয়েন না, ঠিক মতো গাড়ি চালান। শেষে দুজনে না মরে ভূত হতে হয়।
তুমি তো আগে থেকেই ভূতনি। আচ্ছা ভূতনি শোন..

– কি?

আচ্ছা আকাশ প্রপোজ করলে ইতি রাজী হবে তো।
হবে না কেন? না হওয়ার কোনো কারন আছে নাকি।- তবুও তোমাদের মেয়েদের মন বোঝা বড় দায়।
ওহ আচ্ছা আপনারা ছেলেরা তো সাধু নাহ! ইশ কি ঝগড়া করতে পারো তুমি।
আপনি কি কম নাকি ‌
তোমার সাথে থাকতে থাকতে এখন ঝগড়া করা শিখে গেছি।
বেশ তো ভালোই হলো। জীবনে একটা ভালো কাজ করলাম।
ঝগড়া শিখানো ভালো কাজ নাহ ‌
Important এটা না আপনি কি শিখেছেন , Important এটা আমি শিখাতে পেরেছি। হি হি হি!
কতো হাসো তুমি!
হাসলে মন ভালো থাকে বুঝলেন। আপনার মতো গোমরামুখো না আমি!

উনি আমার চোখে আমার দিকে তাকালেন। চা বাগানে যাবার আগে আমরা রেস্টুরেন্টে গিয়ে সকালের নাস্তা করলাম। অতঃপর আমরা চা বাগানে প্রবেশ করলাম। প্রত্যেকটা ভাগ ভাগ, কিছু স্থানীয় লোক চা পাতা তাদের ঝুড়িতে নিচ্ছে।আমি এসব দেখছি। খুব মনোমুগ্ধকর জায়গা টা আর বিশালও। অনেক বড় চা বাগান এটা।‌আমি ঘুরছি আর উনি আমার সাথে সাথে হাঁটছে।হাঁটতে ভালোই লাগছে। এরকম পরিবেশ সবসময় পাওয়া যায় না। ঠান্ডা বাতাস বইছে তবে রোদ ও আছে।‌ কিন্তু রোদের তাপ টা এতো না।তবুও শীত করছে। উনি নিজের জ্যাকেট টা খুলে আমার গায়ে দিয়ে দেন। আমি না বললে উনি বললেন…
আমার শরীরে আরেকটা গেঞ্জি আছে তুমি পড়ো এইটা।
এতো শীত আপনার!
কেন এতোও কি সমস্যা!

– না সমস্যা হবে কেন!

হুম বেশি দূরে যাবে না, আর একলা তো কোথাও যাবে না বুঝলে।
হুম হুম বাচ্চা না আমি। জানি সব কিছু!
জানো বলেই বার বার বলতে হয়।
হঠাৎ উনার একটা ফোন আসে। উনি কথা বলতে বলতে অন্যদিকে চলে যায়। আমি হাঁটতে হাঁটতে অনেকটা দূরে চলে আসি। প্রায় অনেকটা দূরে আসি উনার কাছ থেকে। এখানে সব টাই ঢিলার মতো উঁচু। আমি সেই উঁচু জায়গায় টাই উঠলাম। সেখান থেকে পরিস্কার আকাশ টা দেখতে লাগলাম।
প্রায় অনেকক্ষণ হলো আমি একাই ঘুরছি। আমার ধারনা উনি আমাকে খুঁজে বের করবেন তাই আমি নিজের মতোই করেই ঘুরছি। হঠাৎ পেছন থেকে কেউ কাঁপা কাঁপা গলায় বলল…
নি..হা!
গলাটা খুব পরিচিত, এটা আহিয়ান এর গলা। আমি সাথে সাথে পিছনে ঘুরলাম। উনার দিকে তাকিয়ে অবাক হলাম। এখানে এতো ঠান্ডার মধ্যে উনি ঘেমে একাকার! উনার চুল গুলো এলোমেলো। চোখ কেমন স্থির! ঘন ঘন শ্বাস নিচ্ছেন। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। হুট করেই উনি আমাকে জড়িয়ে ধরলেন। উনার এমন কাজে আমার চক্ষু চড়কগাছ, হতবুদ্ধি’র মতো দাঁড়িয়ে আছি। উনার প্রতিটা নিঃশ্বাস আমার ঘাড়ে পড়ছিল, খুব শক্ত করে জরিয়ে ধরেছিলেন আমায়। উনার স্পর্শে আমার সারা শরীর কাপতে লাগলো।

#চলবে….

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button