গল্প

বাসুকি – শুভজ্যোতি মন্ডল মানিক

নিমাই চন্দ্রের প্রতিদিন তাসের আসরে না যেতে পারলে ভালো লাগেনা।বায়ান্ন তাসের তিপ্পান্ন রকম খেলার প্রায় সবই আয়ত্তে রেখেছে নিমাই চন্দ্র। অত্র অঞ্চলে তাসের হাত বেশ ভালো তার।একদিন বিকালে নিমাই চন্দ্র পাশের গাঁয়ের উদ্দেশ্যে তাস খেলতে রওনা হয়,বন্ধু বান্ধবদের আমন্ত্রণ ফিরিয়ে দেবার মতো বেরসিক তিনি নন।কয়েকটা গেম সম্পন্ন করতে করতে অনেক রাত হয়ে যায়।বাইরে ঘুটঘুটে অন্ধকার,সাথে টর্চ লাইট ও নাই।বন্ধুদের একজনকে কিছুদূর এগিয়ে দিতে বলে,
পাঁচ মিনিটের দূরত্ব এগিয়ে দিয়ে সুমিত বাড়ী ফেরে।নিমাই চন্দ্র একা একা বাড়ির দিকে হাঁটছে। কিছুদূর যেতেই লক্ষ্য করলো মাথার উপর দিয়ে পেঁচা বাদুড় উড়ছে,রাস্তাটাও তেমন সুবিধে নয়।আরো খানিকটা সামনে এগোতেই পাশাপাশি দুটো বাঁশঝাড় পড়ে,ঘরবাড়ি গুলো অনেকটা দূরে দূরে। বাঁশঝাড় বরাবর আসতেই দেখে বাঁশঝাড়ের উঁচুতে শ্বেত বসন পড়া সুন্দরী বসে আছে।নিমাই চন্দ্র কে হাত দিয়ে ইশারা করে কাছে ডাকছে।নিমাই চন্দ্রের বেশ খটকাই লাগলো,বিধবা সুন্দরী কাপড় পড়ে ওখানে উঠলো কি করে?খেয়াল করে দেখলো বিধবা সুন্দরী  লম্বা লম্বা পা বাড়িয়ে এক বাঁশঝাড় থেকে অন্য বাঁশঝাড়ে যাচ্ছে।নিমাইকে আবার ইশারা করছে,ফুলের গন্ধে ভুরভুর করছে জায়গাটা।সব কিছু এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিলো নিমাইয়ের।নিমাই চন্দ্রের মনে পড়ে তার দাদু একদিন বলেছিলেন বাঁশঝাড়ে বাসুকি থাকে।কেমন গা ছমছম করছে নিমাইয়ের।বাড়ী ফেরার পর থেকেই নিমাই জ্বরে আক্রান্ত ।কালাজ্বরে ভুগতে ভুগতে দিন পনেরো পরে সকলের চোখের সামনে এপারের মায়া ত্যাগ করে।এখবর চাউর হতেই লোকজন ও রাস্তা দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেয় বাসুকির ভয়ে।

Related Articles

Back to top button