নিত্য নতুন সকাল বেলায় বেলকনিতে বেসেছিল জোবায়ের সাহেব।দেখছিল নতুন সূর্যের মিষ্টি হাসি। কিন্তু হটাৎ করে কাউকে ধমকানোর গম্ভীর কণ্ঠে আওয়াজ আসলো তার কানে। ভালো করে করে এদিক ওদিক তাকিয়ে আবিস্কার করলো। ধমক টি তার বসার দারোয়ান সাকিব দিয়েছে। এক বাবার মতো বয়স্ক বৃদ্ধকে। কিন্তু কেন? সেই উত্তর জানবার আশায় নিজেই গেলো সাকিবের কাছে। খুব সান্ত স্বরে জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে সাকিব? এত সকালে এত গরম কি হয়েছে! কেনই বা বৃদ্ধকে ধমকালে?
সাকিব বললো স্যার এসব গরিব মানুষ গুলো সাহায্য চেয়ে বিরক্ত করে আর একদিন দিলে প্রতিদিন আসে তাই আমি আজকেই কঠোরতম ব্যাবহার করলাম যেন প্রতিদিন না আসে। জোবায়ের সাহেব বললো এ বিষয় তোমার সাথে পড়ে কথা বলবো আগে তুমি লোকটিকে ডেকে আনো আমি তাঁকে সাহায্য করবো। ডেকে আনা হলো সেই বৃদ্ধকে। বৃদ্ধকে দেখে, জোবায়ের সাহেব অবাক হয়ে গেল। এই বৃদ্ধই যে তার প্রিয় শিক্ষকদের মধ্যে অন্যতম একজন শিক্ষক শফিক স্যার।থতমত খেয়ে জোবায়ের সাহেব বললো, স্যার আপনি এখানে আসলে আমি ঠিক ভালো ভাবে বুঝতে পারছিনা।
তখন, শফিক স্যার কাঁদতে কাঁদতে বললো বাবারে আমি তোমার মতো আরও অনেক ছেলেকে গড়ে তুলছি। কিন্তু আমি আমার নিজের ছেলেকে গড়ে তুলতে পারেনি।আমার একমাত্র ছেলে সাফিন আমার জীবনে যত ইনকাম করেছে তাকে সব কিছু দিয়েছি সাফিন যা চেয়েছে আমি তাকে সব দিয়েছি। জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে, সাফিন বলল বাবা আমি বিদেশে যাব পড়াশোনা করার জন্য। তখন আমার একমাত্র শেষ সম্বল পেনশনের টাকা দিয়ে তাকে বিদেশে পাঠাযই ।সে বিদেশে গিয়ে বিদেশি এক মেয়েকে বিয়ে করেছে আজ সাফিন আমাকে ভুলে গেছে। এই বলে শফিক স্যার কাঁদতে লাগলো। তখন জোবায়ের সাহেব বলল স্যার আমি আছি না আপনার আজ থেকে কোন চিন্তা নেই।
আপনার এক ছেলে ভুলে গিয়েছে তাতে কি হয়েছে! স্যার আমার মতো আপনার কত ছাএ আছে যারা কেউ ডাক্তার, কেউ উকিল, কেউ ব্যাবসায়ী, কেউ চাকুরীজীবি, আরো অনেক কিছু। স্যার আজ থেকে আপনি জীবনে যত দিন বেঁচে থাকেন আমার বাসায় থাকবেন এই বলে জোবায়ের সাহেব তার প্রিয় শিক্ষক শফিক স্যারকে তার বাসায় নিয়ে গেল।
——————————————————–লেখক: মোঃ জোবায়ের হোসেন
যাত্রাবাড়ী