গল্প

রঞ্জিত দে-সুদ চক্র

তপন একটা গেঞ্জি কারখানায় কাজ করে।কলকাতার শহরতলী অঞ্চল সোনারপুর টাউন, সেখানেই একটা কারখানার শ্রমিক তপন পড়াশোনাতে বেশ ভালোই ছিল, উচ্চমাধ্যমিক পড়ার সময় বাবা হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।বাবা একটা রবার ফ্যাক্টরীতে চাকরি করতো, কিন্তু সেটা একসময়ে বন্ধ হয়ে যায়। বাবা সামান্য
কিছু টাকা পেয়েছিল কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। মালিক ভালো বলে তাই কিছু টাকা পাওয়া গিয়েছিল, সেটা দিয়েই উনি একটা চায়ের দোকান দিয়েছিলেন বলে কোনোরকমে সংসারটা চলতো।আর তপন এক ছেলে বাবার, তাই ওকে শিক্ষিত করার ভীষণ ইচ্ছা ছিলো বলেই অনেকটা এগোতে পেরেছিলেন উনি। কিন্তু তপন পরের দিকে একটা চাকরির চেষ্টা করলেও ওর ভাগ্যে সেটা জোটেনি। বাবার মৃত্যুর পর মা সেটাকে চালানোর চেষ্টা করলেও সেভাবে চালাতে পারেননি।শরীর প্রায়ই খারাপের কারনে বেশিরভাগ সময় বন্ধই পড়ে থাকতো দোকান। ওদের পরিবার অত্যন্ত গরীব,যেখানে ওরা থাকতো সেটা পুরো গ্ৰামাঞ্চল। সোনারপুর থেকে বেশ কিছুটা ভিতরে। সোনারপুর টাউন আড়ে বহরে অনেক বেড়েছে।আশে পাশে অনেক বাড়ি হয়ে গেছে,, কলকাতার অনেক লোক এদিকে চলে এসে বাড়ি বানিয়ে বসবাস করছে।সামনেই রেল স্টেশন। কিন্তু ভিতরের দিকের মানুষের জীবনযাত্রা সেভাবে বদলায়নি। বেশিরভাগ লোক ক্ষেতে চাষবাস করে, কেউ রিক্সা চালিয়ে আবার কেউ জন খেটে সামান্য আয়ে কোনোরকমে পেট চালায়। উত্তরাধিকার সুত্রে পাওয়া পাঁচ কাঠা জমির উপরে,বেড়া দিয়ে তৈরি ছোটো তিনখানা ঘর,আগে একটা ঘর ছিল পরে তপনের বাবাই বাকি গুলো করে গেছে। বাইরের দিকে চান করার জন্য বেড়া দিয়ে ঘেরা বাথরুম সঙ্গে একটা পায়খানা ঘর,এছাড়া বাকি জমিতে কিছু ফুল কিছু ফলের গাছ লাগানো।ওর বাবার চায়ের দোকানটা ছিল গ্ৰামের মধ্যেই একটা ছোটো গঞ্জের মতো জায়গায়।বেশ কয়েকটা গুমটি দোকানের মধ্যে একটা দোকান ছিল ওদের।আয় সেরকম কিছু ছিল না। গ্ৰামের আর কটা লোকই বা চা খেতো। বাবা মারা যাবার পর থেকে সংসার চালানোর জন্য একটা মোটামুটি কাজের চেষ্টা করেছিলো তপন। কিন্তু গ্ৰামের মধ্যে সেরকম কিছু না থাকায় সে চেষ্টা ব্যার্থ হয়ে যায়।আর শহরের মধ্যে গিয়ে কাজ খোঁজা তপনের পক্ষে সম্ভব ছিল না। শুধু স্কুল ছাড়া আর কিছুই সেভাবে চিনতো না।পড়া নিয়ে ব্যাস্ত থাকার কারনে শুধু বাড়ি থেকে স্কুল আর স্কুল থেকে বাড়ি এই ছিলো তার দৌড়। কোথাও বেড়ানোর মতো পরিস্থিতি ওর ছিল না তাই অতবড় বিশাল জায়গা কার্যত অচেনাই ছিল ওর কাছে। কিছুদিন অন্যের জমিতে জন খেটে সংসার চলতো মা ছেলের, কিন্তু মায়ের শরীর তেমন ভালো ছিল না বলে ওষুধপত্র প্রায়ই লেগে থাকতো।এই কারণে পড়াশোনা আর চালাতে পারেনি তপন।তারপর গ্ৰামের একজনের সাহায্যে রোজ চারশো টাকা মজুরিতে গেঞ্জি কারখানার শ্রমিকের চাকরি।সাইকেলে করেই যাতায়াত করতো তপন।কালের নিয়মে গ্ৰামেরই গরীব ঘরের একটি মেয়েকে বিয়ে করে ও সংসার পাতে।মা’ও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গত হওয়াতে স্বামী স্ত্রী একটা ছোটো বাচ্চা নিয়ে বর্তমান সংসার।
এভাবেই দিন কেটে যাচ্ছিলো তপনের।
হঠাৎ বেশ কিছুদিন ধরে পেটে ব্যাথা অনুভব করে তপন। কিন্তু কাউকে কিছু না বলে ও প্রতিদিন সকালে সাইকেলে কারখানা চলে যায় আবার রাতে ফিরে আসে বাড়িতে। সকাল আটটা পাঁচটার ডিউটি, মাঝে মাঝে ওভারটাইম পেলে ওভারটাইমও করে। দুপুরে খাবার জন্য বাড়ি থেকে টিফিনকারিতে আগের রাতের বাসি ঠান্ডা ভাত তরকারি নিয়ে যায়। এভাবেই কোনোরকমে চলতে থাকে সংসার। ইদানিং পেটের ব্যাথাটা বেশ বেড়েছে,কাজ করতে করতে ব্যাথাটা বেশ জানান দেয় তবুও মুখ বুজে কাজ করে যায় তপন
কারন এখানে কোনো ছুটিছাটা নেই রবিবার ছাড়া। রবিবার কাজ বন্ধ তাই মজুরি হয়না,আর কামাই করলে সেদিনের পয়সা কাটা। একদিন তো ঘুমের মধ্যেই এত ব্যাথা হয়েছে যে ঘুম ভেঙে চুপ করে বসেছিল।ওর বৌ মামনি বেশ কিছুদিন ধরেই বুঝতে পারছিলো তপনের কিছু একটা হয়েছে। মামনি ঘুম থেকে জেগে উঠে জিজ্ঞেস করে “তোমার কি হয়েছে বলোতো বেশ কিছুদিন ধরে দেখছি তোমার খুব অসুবিধা হচ্ছে,কি হয়েছে”??
—তপন আর থাকতে না পেরে বৌকে বলে একটু তেল আর জল মিশিয়ে পেটে দিতে। খুব ব্যাথা হচ্ছে কয়েকদিন ধরে।
—সেতো দিচ্ছি কিন্তু তুমি এতদিন বলোনি কেনো?বলেই বিছানা থেকে নেমে তেল আর জল এনে মিশিয়ে ওর পেটে মালিশ করতে থাকে।—কিছুক্ষন পর জিজ্ঞেস করে ব্যাথা কমেছে?
— ব্যাথা একটু কম লাগছে কিন্তু আছে।
মামনি বলে “”কাল চলো ডাক্তারের কাছে।
—এখন গেলে হবে না, কারখানায় অর্ডার পড়ে আছে অনেক, তাই ডাক্তার দেখানোর সময় নেই দরকারও নেই এখন।
–ওসব কথা শুনবো না,বাঁচলে তো কাজ করবে, তোমার কিছু হয়ে গেলে পরিবারের কি হবে?
—আমার কিছু হবে না ও আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে।
—না,যদি কমতো তাহলে এতদিনে কমে যেতো কাল যেতেই হবে ডাক্তারের কাছে, একদিন কাজের পয়সা না পেলে কিছু হবে না।আমি ঠিক চালিয়ে নেবো।কাল কাজে যেতে হবে না আমি ডাক্তারের খোঁজখবর নিয়ে কালকেই ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যাবো তোমাকে।সকালেই মনুকাকার কাছে গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে তারপর আমরা টাউনে যাবো। তপন আর কি বলবে চুপ করে থাকে।এই “মনুকাকা”লোকটি তপনদের প্রতিবেশী,কয়েকটা বাড়ির পরে থাকেন।উনি কলকাতায় একটা কাজ করেন, সোনারপুরে কোথায় কি আছে সব ওনার নখদর্পণে।দরকারে সবাই ওনার কাছেই যায়।
পরের দিন মামনি তপনকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে গেলো। সোনারপুর টাউনেই ডাক্তারের চেম্বার।মনিকাকা সব বুঝিয়ে বলে দিয়েছে।কিছুটা হেঁটে বাকিটা রিক্সায় করে সোনারপুর টাউনে পৌঁছে যায়। ওখানে গিয়ে সামান্য খুঁজে ডাক্তারের চেম্বার পেয়ে ঢুকে পড়ে।নাম লিখিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। তপন ভাবছে একেই কাজ কামাই তার মধ্যে রিক্সাভাড়া পঁচিশ টাকা চলে গেলো, ফেরার সময় আবার পঁচিশ টাকা লাগবে তার ওপর ডাক্তারের ভিজিট দুশো টাকা আবার ডাক্তার ওষুধ দিলে কত লাগবে কে জানে।এত খরচ সামলাবে কি করে,ঘরে বাচ্চার একটা খরচ আছে তার ওপর তার এই,,,,
ডাক পড়লো তপন সাঁধুখা,,,,, মামনি তপনকে নিয়ে ঢুকে পড়ে।
ডাক্তার ভালো করে দেখে কিছু টেষ্ট আর ব্যাথা কমানোর জন্য কয়েকটা ট্যাবলেট লিখে দেয়।বলে দেয় রিপোর্ট দেখে তারপর বলবো,তবে মনে হচ্ছে আলসার, সেরকম হলে অপারেশন করাতে হবে।আর টেষ্ট গুলো পাশের প্যাথোলজিকাল সেন্টার থেকে করিয়ে নিন আমার নাম করে,কিছুটা কমে করে দেবে।খালি পেটে আর খেয়ে নিয়ে টেষ্টগুলো হবে।
ডাক্তারখানা থেকে বেরিয়ে তপন বললো কিছু দরকার নেই ওষুধ খেলেই সব সেরে যাবে, একগাদা টাকা খরচ করা যাবেনা, তাছাড়া টাকা কোথায়?
মামনি বলে দরকার হলে মালিকের থেকে ধার চেয়ে নেবে মাইনে থেকে শোধ করবে তবুও টেষ্ট গুলো করাতে হবে।এ আরেক সমস্যা,খালি পেটে দুটো টেষ্ট। রক্ত আর ইউরিন টেস্ট খেয়ে করাতে হবে।তার মানে আরেকটা দিন।এতদুর যখন এসেছে তখন সব খোঁজখবর নিয়ে দিন ঠিক করে যাবে। খোঁজখবর নিয়ে জানা গেলো রবিবারেও টেষ্ট করা যাবে তবে বেলা বারোটা অবধি।খরচ প্রায় হাজার দুয়েক টাকা। রিপোর্ট পরেরদিন বেলা এগারোটায় পাওয়া যাবে।
–অন্তত একটা দিন বাঁচানো গেলো। ছুটির দিনেই কাজটা সেরে নেওয়া যাবে কিন্তু খরচটা তো অনেক।
মামনি বললো কাল গিয়ে মালিককে বলে আগাম নিয়ে নেবে, তাছাড়া এই ডাক্তারের কাগজটা দেখাবে তাহলেই হবে।
পরের দিন তপন কারখানায় গিয়ে মালিককে প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে দু’হাজার টাকা আগাম চাইলো,মালিক দেখে শুনে বললো ঠিক আছে নিয়ে যাস কিন্তু মাইনে থেকে সবটা একেবারে কেটে নেবো।
–ঠিক আছে।
রবিবারের সকালে খালি পেটে মামনি কে নিয়ে তপন বেরিয়ে পড়ে বাড়ি থেকে সোনারপুর টাউনে।খালি পেটের পরীক্ষাগুলো করিয়ে নেয় আর কথা বলে নেয় যাতে পরেরদিন কারখানার কাজের ফাঁকে এসে বাকি পরীক্ষাগুলো করিয়ে নেওয়া যায়। রিপোর্ট একসাথেই নেবে তার পরেরদিন।এটা তপনই ভেবেছে শুধু শুধু কামাই করাটা ঠিক হবে না, এমনি মাইনে কমের কারনে সংসারে টানাটানি তার ওপর কেটে নিলে থাকবেটা কি।ও একবার মালিককে টেষ্ট করার জন্য কিছু সময়ের জন্য ছেড়ে দিতে বললে মালিক হয়তো না করবে না,এমনিতে মালিক লোকটা খারাপ নয় আসলে বাজার খারাপ লকডাউনের পর থেকেই,কাজ শুরু হবার পর কোনোরকমে কারখানা চলছে তার ওপরে অনেক জায়গায় পেমেন্ট বাকি পড়ে আছে,কেউ সহজে দিতে চাইছে না। কোনোরকমে কারখানাটা চালিয়ে নিচ্ছেন বলেই তপনরা কাজ করে খেয়ে পড়ে পারছে।
        ডাক্তার টেষ্টের রিপোর্ট দেখে নিয়ে বলে দিলো “”আমার ধারনাই ঠিক, ওনার আলসার হয়েছে অপারেশন করাতে হবে। মামনি উদ্বিগ্ন মুখে বলে ডাক্তারবাবু অপারেশন করাতে কত খরচ হবে?
–ধরে নিন নার্সিংহোমের প্যাকেজ অনুযায়ী পঞ্চাশ হাজার,তাও আমার পরিচিত নার্সিংহোমে।অন্য কোথাও আরো বেশি হতে পারে।
তপনের মাথায় বাজ পড়ে,এখন এত টাকা কোথায় পাবে?এসব ভেবে ডাক্তারবাবুকে বলে যে সরকারী হাসপাতালে এই অপারেশন করানো যাবে না?
—যাবে না কেনো, কিন্তু হাসপাতালে যা ভিড়,কবে আপনার ভর্তি হবে কবে অপারেশন হবে সেটা বলা সম্ভব নয় কিন্তু এই অপারেশনটা তাড়াতাড়ি করতে হবে নাহলে আরো ক্ষতি হতে পারে।
ডাক্তারের চেম্বার থেকে তপন মামনিকে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বলে “আমি তোমাকে বলেছিলাম যে এসব দরকার নেই, এমনিতেই দুদিন ডাক্তার দেখানোর জন্য কামাই হলো,তার ওপর রিক্সাভাড়া, ওষুধ, টেষ্টের খরচ এসব কি আমাদের মতো গরীবের পক্ষে সম্ভব?
মামনি বলে ” তা বলে তুমি এভাবে কষ্ট করে কতদিন কাজ করতে পারবে? বিছানায় পড়ে গেলে আমার আর ছেলের কি হবে?
মামনি বলে একবার মনুকাকার সঙ্গে কথা বলে দেখি রাতে।
      মনুকাকা সব দেখে শুনে বলেন একবার কলকাতায় হাসপাতালে গিয়ে দেখাও কি বলে দেখো।আমি কাজে যাবার সময় তোমরা আমার সঙ্গে গেলে আমি হাসপাতালে পৌঁছে দিয়ে বেরিয়ে যাবো। ওখানে দু’টাকা দিয়ে টিকিট করে ডাক্তার দেখিয়ে দেখো ওরা কি বলে।সব টেষ্টের রিপোর্ট ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন নিয়ে যেতে হবে।
    সেইমতো হাসপাতালে পৌঁছিয়ে দিয়ে মনুকাকা নিজের কাজে চলে যায়।অত বড় হাসপাতাল দেখে ওদের এমনি চক্ষু চড়কগাছ, কোথায় যাবে ডাক্তার দেখাতে ভেবে পায়না।সাহসে ভর করে মামনি একে তাকে জিজ্ঞেস করে আউটডোরের দুটাকার টিকিট কেটে অপেক্ষা করে।
       অনেকক্ষণ পর নাম ডাকলে ওরা ডাক্তারের কাছে পৌঁছায়।ডাক্তার সব দেখে শুনে বলে বাইরের টেষ্টের কাগজ এখানে চলবে না নতুন করে টেষ্ট করিয়ে আসুন।আমি লিখে দিচ্ছি সব, হাসপাতালের বাইরে একটা প্যাথোলোজিকাল সেন্টার আছে ওখানেই টেষ্ট করিয়ে নেবেন।সব মিলিয়ে তিনহাজারের মধ্যে হয়ে যাবে।তারপর এক সপ্তাহ বাদে এসে দেখিয়ে নেবেন।
  ওরা ডাক্তারবাবুর কথামতো খোঁজ নিয়ে সেই সেন্টারে গিয়ে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন দেখায়।ওরা দেখে বলে এখানে পাঁচ রকমের টেষ্ট আছে,খরচ অনেক বেশি তবে ডাক্তারবাবু পাঠিয়েছেন তাই তিনহাজার দুশো টাকা টোটাল লাগবে।পরের দিন খালি পেটে চলে আসবেন।
আবার বেরিয়ে দুজনে চলতে শুরু করে।তপন বলে দেখেছো কতো হাঙ্গামা। এখানে অপারেশন করানো এত সহজ নয়,যা দেখলাম তাতে অনেকবার আসতে হবে আর তাতেও যে ভর্তি হওয়া সহজ নয় সেটা ভিড় দেখেই বোঝা যায়।
মামনি মন খারাপ করে হাঁটতে থাকে।
বাড়ি ফিরতে ফিরতে প্রায় বিকেল।বাসের ভিড়,ট্রেনের ভিড় ঠেলে বাড়িতে এসে দুজনেই ক্লান্ত তার মধ্যে সারাদিন খাবার পেটে পড়েনি হাসপাতালের চক্বরে।তার ওপর খরচের কথা ভেবে আর কিছু খাওয়া হয়নি। ছেলেটাকে পাশের বাড়িতে দিয়ে মামনি হাসপাতালে গিয়েছিল, ওকে বাড়িতে নিয়ে আসে।তারপর শুকনো কাঠ পাতা জ্বালিয়ে একটু ভাত আর আলু চাপিয়ে দেয়।তপন বুঝতে পারে পেটের ব্যাথাটা আবার চাগাড় দিয়েছে।ও চুপ করে বিছানায় শুয়ে থাকে।
      রাতে বসে স্বামী স্ত্রী আলোচনা করে এখন কি করা উচিত। মনু কাকাকে বাড়িতে ডেকে হাসপাতালের সব ঘটনা খুলে বলে।এই অবস্থায় হাসপাতালের জন্য বসে থাকলে ঝুঁকি হয়ে যাবে–মনুকাকা বলেন।
 তাহলে এখন উপায়?
মালিককে একবার তপন বলে দেখুক মালিক কোনো সাহায্য করতে পারে কিনা,সেই বুঝে পরবর্তী সিদ্ধান্ত–বলে মনুকাকা বিদায় নেন।
   কারখানার গিয়ে তপন মালিককে সব বলে, এখানকার চেম্বারের ডাক্তারবাবুর কথা থেকে শুরু করে হাসপাতালের কথা অবধি। কিন্তু মালিক প্রথমেই বলে “এত টাকা অসম্ভব ব্যাপার কোথায় পাবো? এমনিতেই অনেক পেমেন্ট বাজারে পড়ে আছে সময়মতো কেউ দিচ্ছে না তার ওপরে অর্ডারগুলো সাপ্লাই দিতে গেলে অনেক টাকা লাগবে,সেটাও সম্ভব হচ্ছে না, আবার সবার মজুরিও দিতে হচ্ছে,ব্যাঙ্কের জমানো তহবিল প্রায় খালি হয়ে গেছে।পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতে গেলে সব কাজ বন্ধ হয়ে যাবে””।
তার ওপর তপনের চিকিৎসা শুরু হলে সেসময় কাজের মজুরিও বন্ধ হয়ে যাবে।সব মিলিয়ে আতান্তরে পরে তপন,কি করবে ভেবে পায়না।
      মামনির ডাকে মনুকাকা বাড়িতে এলে তপন মালিকের কথা সব বলে।এখন কি উপায়?মনুকাকা অনেকক্ষণ চুপ করে থেকে একটু চিন্তা করে।
—-এখন একটাই উপায় কারুর কাছ থেকে টাকা ধার করে নার্সিংহোমেই অপারেশন করা উচিত কিন্তু,,,,,,ধার এমনিতে কেউ দেবে না, সোনারপুর বাজারে দুএকজন আছে যারা সুদে টাকা দেয়।তার মধ্যে একজনকে চিনি আমি।ঠিক আছে আমি বাড়ি ফেরার সময় ওই লোকের সাথে কথা বলে আমি কাল রাতে এসে জানাবো।
আমার পরিচিত যে আছে সে রাজি হয়েছে তবে দশ পার্সেন্ট সুদ দিতে হবে, প্রতিমাসের পাঁচ তারিখের মধ্যে সুদের টাকা দিয়ে দিতে হবে।
তপন শুনে বলে অপারেশনের দরকার নেই মরি মরবো কিন্তু এত টাকা সুদে নিতে পারবো না।
—কিন্ত কোনো উপায় তো দেখছি না, তুমি মরে গেলে ছেলের কি হবে আমার কি হবে একবার ভেবে দেখেছো?
 –অপারেশন করা আর তারপর বাড়িতে বিশ্রাম নিয়ে সুস্থ্য হয়ে কাজে যোগ দেওয়া অবধি হাত শূন্য?পুরো মাস পয়সা পাওয়া যাবে না।তারপর কাজে যোগ দিয়ে এক মাস কাজ করার পর মাইনে।এ মাসের মাইনে থেকে তো পুরো দু’হাজার টাকা কেটে নেবে মালিক,তপন বলে
–আগে তো টাকা নিয়ে অপারেশনটা করাও তারপর সব দেখা যাবে।
—কিভাবে দেখবে?মাস গেলে তো আগে সুদটা দিতে হবে।তারপর বাচ্চার তো একটা খরচ আছে।
—সেটা ভেবে রেখেছি, বিয়ের সময় বাবা যে কয়েকটা গয়না দিয়েছিল সেটা বিক্রি করে সুদের টাকা মিটিয়ে দেবো তারপর তুমি আবার কাজে ফিরলে মাইনে থেকে কিছুটা আসল কিছুটা সুদ দিয়ে চালিয়ে নিতে হবে।কষ্ট করে ঠিক চালিয়ে নেবো আমি।তুমি বেঁচে থাকলে আবার সব হবে।
শেষ অবধি ঠিক হয় সুদে টাকা নিয়েই অপারেশন করতে হবে।
রবিবার ছুটির দিন সকালে মনুকাকা একটা লোককে সঙ্গে করে তপনদের বাড়ি আসেন।
—-তপন এই ভদ্রলোক সুদে টাকা দেন,ওর সাথে তোমরা কথা বলে নাও।
লোকটা কালো মোটা,পান খেয়ে দাঁত প্রায় কালো করে ফেলেছে, চোখগুলো লালচে টাইপের দেখলেই ভয় লাগে, ভদ্রলোককে দেখে মামনি মনে মনে ভাবলো।মনুকাকা যা বলেছে লোকটাও তাই তাই বলেছে। প্রতিমাসের পাঁচ তারিখের মধ্যেই সুদ দশ পার্সেন্ট দিয়ে দিতে হবে,মনুকাকা সাক্ষী। কথাবার্তার পর ঠিক হলো বিকেলে বাড়িতে এসে লোকটা টাকা দিয়ে যাবে।
     সেইমতো একটা কাগজে লেখাপড়া করে মনু কাকাকে সাক্ষী রেখে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে গেলো মন্টু সর্দার মানে সুদে টাকা খাটানো “ভদ্রলোক”।
      ডাক্তারবাবুর সাথে কথা বলে নার্সিংহোমে ভর্তি হয়ে যায় তপন। অপারেশন উনি নিজেই করবেন।প্যাকেজ অনুযায়ী পঞ্চাশ হাজার টাকা আগে জমা করে দেয় তপন।
        নির্দিষ্ট দিনে অপারেশন হয়ে যায় তপনের।তারপর এক সপ্তাহ পরেই ছুটি হয়ে গেলে বাড়ি ফিরে এসে আরো কয়েকটা দিন বিশ্রাম নেয় অপারেশনের জায়গা শুকানোর জন্য।
     একটু সুস্থ্য হয়ে দিন কুড়ি বাদে কারখানার কাজে যোগ দেয় তপন।এখন অনেক হালকা,অস্বস্তিটা একদম চলে গেছে। একটু ভালো লাগে তপনের কিন্তু পরক্ষনেই সুদের কথা ভেবে মনটা খারাপ হয়ে যায়। গয়না বিক্রি করে ন’হাজার টাকা পাওয়া যায় তার মধ্যে নির্দিষ্ট দিনে লোকটা এসে পাঁচহাজার টাকা নিয়ে যায়।
এভাবে প্রায় একবছর হতে চললো। প্রতিমাসের সুদের টাকা মিটিয়ে যাচ্ছে তপন।মাসে ছাব্বিশ দিনের কাজ দশ হাজার চারশো টাকা বেতন মাত্র, ওভারটাইম এখন আর হয়না।ওই টাকার মধ্যে পাঁচহাজার টাকা সুদের জন্য চলে যাচ্ছে,বাকি থাকছে পাঁচ হাজার চারশো।ভেবেছিলো সুদের সঙ্গে কিছু কিছু করে আসলটাও দিয়ে দেবে কিন্তু হিসেব মেলে না অনেক সময়। কোনোরকমে তো চলছিলো এতদিন এবারে আরো বড় সমস্যা এসে হাজির।মালিক বলে দিয়েছে এখন আর রোজ কাজ হবে না,আর মাইনে একেবারে নাও হতে পারে।যা মাইনে হবে সেটা দুবারে নিতে হবে,কেউ যদি না মানে তাহলে মালিকের পক্ষে কারখানা চালানো সম্ভব হবে না সেক্ষেত্রে কারখানা বন্ধ করে দিতে হবে।সমস্ত শ্রমিকরা মিলে আলোচনা করে ঠিক করলো ওনার কথা না মানলে সবাই বিপদে পড়ে যাবে,এই মুহূর্তে কাজের বাজার খুব খারাপ তাছাড়া মালিক ওদের সময়ে অসময়ে পাশে দাঁড়িয়েছে তাই এখন ওনার পাশে সবার দাঁড়ানো উচিত।
সেইমতো ঠিক হলো মালিক যেভাবে চলতে চাইবে সেভাবেই সব চলবে। এছাড়া কোনো উপায় নেই।
  এতদিন তো কোনোরকমে চলছিল এবার কি হবে? বাড়িতে গিয়ে মামনিকে সব বললো। কিন্তু সুরাহা কিছু হলো না।
       মাস শেষে দেখা গেলো মোট আঠেরো দিন কাজ হয়েছে।এই প্রথম সুদ দিতে গিয়ে সমস্যা হলো,মাত্র সাত হাজার দুশো টাকা মাইনে হয়েছে তার মধ্যে পাঁচহাজার টাকা যদি সুদে চলে যায় তাহলে ছোটো বাচ্চা কি খাবে আর আমাদের চলবে কি করে।লোকটা এলে মামনি কারখানার অবস্থা জানিয়ে বললো দু’হাজার টাকা রাখুন আপাতত।লোকটি বললো না পুরো সুদ দিতে হবে। নাহলে এখান থেকে যাবো না। কোলাহল দেখে আশপাশের লোক এসে সব কিছু মামনির কাছ থেকে শুনে লোকটাকে বললো আপনাকে তো এতদিন ঠিকমতো সুদ দিয়েছে এখন বিপদে পড়লে কি করবে।লোকটা কোনো কথাই শুনতে চায় না,সে বলে নেবার সময় তো সব বলে দিয়েছিলাম আর এখন দেবার সময় এসব বললে শুনবো না।শেষ অবধি লোকটা বললো আমি কাল সকালে আসছি মনুদাকে বলবেন থাকতে তারপর ফয়সালা হবে বলে লোকটা চলে যায়।
  সন্ধাবেলায় মনুকাকা লোকের মুখে শুনে তপনদের বাড়ি এসে তপনকে বলেন ওরা লোক ভালো নয় ওরা সুদ না দিলে অনেক ঝামেলা করে, তাছাড়া লোকটা তপনের কারখানা চেনে, ওখানে কিছু করলে মুশকিল।
সকালে লোকটা মনুকাকাকে সঙ্গে নিয়ে এসে প্রায় হুমকি দিয়ে যায় তপনকে, আপনি সাতদিনের মধ্যে পুরো টাকা দিয়ে দেবেন। নাহলে কিন্তু ঝামেলা হবে।
  তপন মামনি খুব চিন্তায় পড়ে যায় এরপর কি হবে।পাড়ার প্রতিবেশীরা দুর থেকে কথা শুনে সবাই তপনদের বাড়িতে আসেন,সবাই বলাবলি করেন এরা স্বামী স্ত্রী খুব ভালো,কষ্ট করে তবুও কাউকে মুখ ফুটে কিছু বলেনা এত কষ্টেও হাসিমুখে থাকে।সুদখোর লোকটা যখন বাড়িতে এসে হুজ্জতি করছিল তখন মামনি বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে ভয়ে চুপ করে ছিলো। প্রতিবেশীরা ঠিক করলো সবাই তপনের পরিবারের পাশেই থাকবে। ইতিমধ্যে তপনের কারখানায় গিয়ে কতগুলো ছেলে ছোকড়া বলে এসেছে টাকাটা ঠিক টাইমে দিয়ে দিতে নাহলে বাওয়াল হবে।মালিক নিজে গিয়ে ছেলেগুলোর সাথে কথা বলে,”তপন ভালো ছেলে ও কারুর টাকা মারবে না আমার কারখানার অবস্থা ভালো থাকলে আমি নিজেই ওকে সাহায্য করতাম।তা সত্ত্বেও ছেলেগুলো খিস্তি দিয়ে চলে যায়।
সাতদিন বাদে লোকটা আবার এসে পুরো টাকা চায়, মামনি বলে জোগাড় হয়নি হলে দিয়ে দেবো বলেছি তো আপনাকে,এই কথা শুনে লোকটা চিৎকার করে গালাগালি করে মামনিকে, গালাগালি শুনে প্রতিবেশীরা এসে লোকটাকে বলে আপনাকে তো একবছর ধরে সুদ দিয়ে এসেছে, পঞ্চাশ হাজার দিয়ে তো ষাটহাজার পেয়ে গেছেন তাহলে এরকম ব্যাবহার করছেন কেনো?লোকটা বলে টাকা না পেলে এরকম হবে। প্রতিবেশীদের প্রতিরোধে “পরে দেখে নেবো”বলে লোকটা চলে যায়। কয়েকদিন বাদে তপন কারখানা থেকে বেরোনোর পর কতগুলো ছেলে এসে মারধোর করে জামা ছিঁড়ে দেয়,বলে টাকা না দিলে এমন করবো মুখ দেখাতে পারবি না।মারের চোটে তপনের ঠোঁট কেটে রক্ত ঝড়তে থাকে,সেই অবস্থায় কোনোরকমে বাড়ি ফেরে।পাড়ার প্রতিবেশীরা সব শুনে বলে এবার এই সুদখোরকে সময় এসেছে চরম শিক্ষা দেবার।এদের জন্য আজ গরীব মানুষ গুলো মরছে।বিপদে পড়ে টাকা নিয়ে সুদের চক্রে পড়ে অনেকেই সম্মান বাঁচাতে আত্মহত্যা করেছে,এই অবস্থা চলতে দেওয়া যায়না। প্রতিবেশীদের মধ্যে যুবক ছেলেরা এগিয়ে এসে বলে এবার হেস্তনেস্ত করতে হবে।
পরের দিন আর কারখানায় যেতে পারে না তপন,গায়ে জ্বর শরীরে ব্যাথা।সুদখোর লোকটা কয়েকটা ছেলে নিয়ে এসে ঘরের সামনে এসে টাকা চেয়ে ঝামেলা শুরু করে। মামনি ছেলে কোলে ঘর থেকে বেরিয়ে বলে টাকা জোগাড় হলে দেবো কিন্তু কাল তোমরা আমার স্বামীকে এমন মেরেছো যে ওর শরীর খারাপ হয়ে গেছে। এবার লোকটা বলে ওঠে মরে তো যায়নি, এবার তোর পালা “টাকা দে”বলেই ধাক্বা মারে মামনিকে।মামনি ছেলে সমেত ছিটকে পড়ে মাটিতে।প্রতিবেশীরা আড়ালেই ছিল,লোকটাকে মামনিকে ধাক্বা মারতে দেখে সবাই ছুটে এসে লোকটাকে আগে ধরে তারপর লোকটার সঙ্গে আসা ছেলেগুলোকে ধরতে যায়, ছেলেগুলো কোনোরকমে হাত ছাড়িয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এবার সবাই লোকটাকে ঘিরে ধরে চড় চাপড় মারে। গ্ৰামের মধ্যে খবর হয়ে যেতে সবাই ছুটে আসে। কয়েকজন মহিলা মামনিকে মাটি থেকে ওঠায়, মামনির পড়ে গিয়ে কপাল ফেটে যায়।মহিলারা সবাই মিলে প্রাথমিক পরিচর্যা করে মামনির।ওর ছেলেটাও কোল থেকে পড়ে ছিটকে পড়ে গিয়েছিল কিন্তু কিছু হয়নি, প্রতিবেশীদের একজন বাচ্চাটাকে কোলে তুলে নেয়।এর মধ্যে থানায় খবর চলে যায়।থানা থেকে বড়বাবু নিজে চলে এসে সবকিছু শোনেন,এর মধ্যে খবর পেয়ে একজন সাংবাদিকও চলে আসে। বড়বাবু লোকটাকে ডেকে বলে তুই সুদে টাকা খাটাস নাকি?
লোকটা বলে টাকা ধার চেয়েছিল দিয়েছিলাম।
–তা কত সুদে টাকা দিয়েছিলি?
–দশ পার্সেন্ট স্যার
–তা সুদে ব্যাবসা করিস সেটার জন্য লাইসেন্স লাগে সেটা দেখা?
—না স্যার লাইসেন্স নেই
—তাহলে তো বড় কেস খেলি সুদের ব্যাবসা করিস আর লাইসেন্স করিস নি?তার মানে তো তোর ব্যাবসাতে ট্যাক্স দিস না,মানে সবটাই কালো টাকা।
তারপর মামনিকে ডেকে সব শোনেন বড় বাবু,তপন ঘর থেকে বেরিয়ে এসে টাকা নেবার ব্যাপারটা সব বলে,আর কত টাকা এতদিনে সুদ দিয়েছে সেটাও বলে।প্রতিবেশীরা বলে কিভাবে এই লোকটা মামনি কে ধাক্বা দিয়ে ফেলে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে,বাচ্চাটাও ওর কোল থেকে ছিটকে পড়ে গিয়েছিল কপালজোড়ে কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।তপনও এসে আগের দিন ওকে মারধোরের কথা বড় বাবুকে বলে।
সব শুনে বড়বাবু বলে তুই তো অনেক বড় শয়তান,ডবল কেস খেয়েছিস,এর আগেও তোর সম্বন্ধে রিপোর্ট পেয়েছিলাম কিন্তু কেউ কমপ্লেন করেনি বলে বেঁচে গিয়েছিলি। এবারে আর কোনো উপায় নেই।এই তোদের জন্য গরীব মানুষ গুলোর সর্বস্ব শেষ হয়ে যাচ্ছে তোদের চক্রে পড়ে জমি জায়গা সব বিক্রি করে পথের ভিখারি হয়ে যাচ্ছে। কঠিন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাবি তুই,তোর শাস্তি দেখে বাকি সুদখোর গুলো যদি না বদলায় তাহলে ওদেরও তোর মতো অবস্থা হবে।
বড়বাবু মামনিকে দিয়ে ভালো করে একটা কমপ্লেন লিখিয়ে নেন তাতে ওকে যে ধাক্বা দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে সেটাও লিখতে বলেন,স্বামীকেও ওরা মেরেছে সেটাও যেনো থাকে।ব্যাস এবার বুঝবি সুদ চক্রে থাকলে কি হয়।একে কালো টাকার কেস তার ওপর নারী নির্যাতনের মামলা।
লোকটাকে হাতে হাতকড়া পড়িয়ে টানতে টানতে জিপে তোলে কনস্টেবলরা। বড়বাবু চলে যাবার সময় সবার উদ্দেশ্যে বলেন কেউ এই ধরনের ফাঁদে পা দেবেন না যদি এরকম কাউকে সুদের কারবার করতে দেখেন সঙ্গে সঙ্গে থানায় জানাবেন। পুলিশের জিপ আস্তে আস্তে চলে যায় অনেক দুর, শুধু কিছু গাড়ীর ধোঁয়া আস্তে আস্তে মিলিয়ে যেতে থাকে।
পরের দিন সকালে একটা কাগজে হেড লাইন খবর”” সুদ চক্রের হাতে পড়ে মহিলা নিগৃহীত। সুদখোর গ্ৰেপ্তার””
                   সমাপ্ত

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button