ছোটো বেলা ওদের সাথেই কেটেছে। সুখে দুঃখে ওরাই পাশে ছিল। সে সৃতি আজও মনে পড়ে। ইস যদি আবারও দিনগুলো ফিরে পেতাম। খুব ইচ্ছে জাগে, সবারই।
আমি নানা বাড়ি থেকে প্রাইমেরীতে পড়েছি । আমি ছোটো বেলা থেকেই একটু সান্ত,স্বরল ছিলাম। বেশি মিশতে পারতাম না কারো সাথে। একা একা কাটাতে হতো প্রাই। তবুও বন্ধু ছিল। জীবনে কার না বন্ধু থাকে। জীবনে যার বন্ধু নেই সে সবচেয়ে পাপি। হতভাগাদের ও হতভগা সে। তবে আমি যার সাথে বেশি মিশেছি তখন, ওর নাম ছিল আবুবকর। আর যেমন তেমন গনিতে খুব ভালোই ছিল মোটামুটি। ক্লাসে একি বেঞ্চে আমাদের বসা হতো। ভালো গল্পগুজব ও হতো, তবে তেমন কোনো অভিমান হতো না।
এভাবেই চলছিল আমাদের শিশু বেলা। কয়েকবার আবু বকর আমার বাড়িতে গেছে আমিও গিয়েছি কয়েকবার। মাঝে মাঝে মায়ের ফোন দিয়ে কথা হতো ওর সাথে। সমাপনী পরীক্ষার পড়ে আমি মুন্সিগঞ্জ চলে আসি আমার বাবা ওখানে আগ থেকেই থাকতো। তাই মা ও আমি সেখানেই চলে আসি। আসার পরে এখানেই আমার পড়া লেখা শুরু হয়। যদিও ওর ফোন নম্বর এনেছিলাম কিন্তু বেশিদিন রাখতে পারিনি। যদিও ঢাকায় আসার পরে মাত্র কয়েকদিন যোগাযোগ ছিল। আমাদের নম্বর পরিবর্তন হয় তাই ওর সাথে আর যোগাযোগ হয়নি। কিন্তু মনে মনে খুব মিস করতাম ওকে। বিশেষ করে ঘুমের সময় অজান্তেই ওর কথা মনে পড়তো।
এভাবেই দেখতে দেখতে পাঁচ বতসর চলে গেলো। যদিও এর মাঝে কয়েকবার গিয়েছিলাম কিন্তু দেখা করতে পারিনি ওর সাথে। আর শেষের তিন বতসর একদম যাওয়াই হয়নি। এখন (২০১৯ )সাল ওরা এ বতসর ইন্টার ফাষ্টডিয়ারে। আর আমি কওমিতে পরা লেখা করেছি। ১৯ সালে আসি আমার নানা বাড়ি গেলাম। কেউ আমাকে চিনেনা। আর আমিও পরিচয় দেইনি শুধু ঘুরে ঘুরে দেখলাম। দিনটা ছিল শুক্রবার। জুমার নামাজ পড়লাম আমাদের স্কুলের পাশে এক মসজিদে। আজকে খুব মনে পড়ছে আবু বকর কে। ভাবলাম আজকে ওর সাথে দেখা করতে যাব ওদের বাড়িতে। গ্রামটা খুব অচেনা লাগছে অনেক পরিবর্তন হয়েছে।
আবু বকরের বাড়ির নাম ছিল খলিফা বাড়ি ওর বাড়ির নাম আর ওর নাম মনে আছে আর কিছুই তেমন মনে নেই। আমি হাটতে লাগলাম ওর বাড়ির দিকে, নিস্তব্ধ দুপুর বেলায়। খুব ভয় করছে, কারন গ্রামে তখন একটা গুজব চলছে। গলাকাটা নিয়ে গ্রাম থেকে শিশুদের গলা কেটে নিয়ে যেতো ব্রিজের জন্য । তাই অপরিচিত কাউকে দেখলে অনেক কৈফিয়ত চাইতো। আমি ভালো করে আমার বাড়ির ঠিকানাও আমার জানা নেই কারন বাড়িতে কখনোই থাকা হয়নি যাওয়া হয়নি তেমন। আমাকে জিজ্ঞেস করলে কিছুই বলতে পারবো না। তখন যদি গণধোলাই খেতে হয়, কে বাঁচাবে আমায়? আসলে এই গণধোলাইর ভয় করছে।
ওর বাড়িটা ঠিক মনে করতে পারছি না। অথচ ওর বাড়ির সামনেই তখন দাড়িয়ে আছি। জানি এখানেই হবে কিন্তু সন্দেহ হচ্ছে। এমন দুপুরে কাউকে দেখতেও পাচ্ছি না। কি ভাবেই বা দেখবো? সবাই তো তখন বিশ্রাম নিচ্ছে। বকরের বাড়ির দরজায় কয়েকজন বাচ্চারা খেলা করছে। আমি ওদের ডাক দেইনি যদি ওরা আমায় না চেনার কারনে চেচিয়ে বলে, আমি গলা কাটা! তাহলে এলাকার সবাই আমায় ভাগেও পাবে না এ কারণেই ডাক দেইনি ওদের। কিছুক্ষণ পড়ে একজন লোক আসলো ওর বাড়ি থেকে। তাকে জিজ্ঞেস করলাম এখানে খলিফা বাড়ি কোনটা? তিনি বললেন এটাই খলিফা বাড়ি। কাকে চাও? আমি বললাম আবু বকর, ওকি বাড়িতে আছে? হ্যা ও বাড়িতে আছে। একটু ডাক দিয়ে দিবেন? ভদ্রলোকটা নিজেই আবু বকরকে নিয়ে এলো।
আবু বকর আসছে, ওর হাটার স্টাইল সেটি ছোটো বেলার মতোই, বডিফিগারও আগের মতোই। এক পলক দেখতেই চিনে ফেলি ওকে। একটা সালাম দিয়ে মুসাফা করে ওকে জড়িয়ে ধরলাম। পরে জিজ্ঞেস করলাম আমায় চিনতে পেরপছেন? হুম আলি আকবর ¡ তখনের অনুভূতিটাই ছিল অন্যরক খুব ইনজয় করার মতো তাইতো তোমাদের কাছেও শেয়ার করলাম। ও নিরব কে ডাক দিল। নিরব কে পথে আমি দেখেছি ফোনে গেম খেলে কিন্তু আমি ওকে কিছু বলিনি, যদি ও না চিনে আমাকে? স্কুলে নিরবের সাথে তেমন মেশা হয়নি তবে মাঝে মাঝে কথা হতো। ও ছিল ওর নামের মতোই নিরব। যদিও ও এখন পরিবর্তন হয়েছে। ওর সাথে পরিচয় হলাম। তারপর হাসনাতের কাছে ফোন দিলো। একটু পড়ে হাসনাত আসলো। আমি হাসনাত কে দেখে একটু অবাকই হলাম
স্কুলে ওর সাথে কথা হতোনা বললেই চলতো। ও ছিল ক্লাসের ফার্স্ট বয়। আমি এখনো ওকে বলি ইশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর। আগের মতো না পড়লেও আগের স্থান কিন্তুু ছেড়ে দেইনি। এখনো সবাই চমকে উঠে হাসনাতের রেজাল্ট দেখে। কোনো টিচারের মা’র খেতে দেখিনি ওকে। আর আমিতো হলাম এক মাথা মোটা চলবোই বা কি করে ওর সাথে। তবে এখন সবচেয়ে বেশি ওর সাথে আমার কথা হয়। আমার জানামতে ও হাফেজি মাদ্রাসায় পড়ে। ক্লাস ফোরের সময় ও হাফেজি মাদ্রাসায় গেছে। পরে জানতে পাড়ি কয়েকদিন পড়ে আবার স্কুলে ভর্তি হয়েছে। আসলে ওর জীবন টা কষ্টের ও বেদনা দায়োক। ওর কথা ভেবে মাঝে মধ্যে আমারও মন খারাপ হয়।
এই ছিল ওদের সাথে দেখা করার আলাদা এক অনুভূতি। এখনো অনেক ক্লাসমেন্টদের সাথে দেখা হয়নি ওদের খুব মিস করছি।মনচায় আবার সবাইকে যদি একসাথে দেখতে পেতাম! আসলে সে দিনগুলোতে আর ফেরা হবেনা। শুধু আখাংকা থেকে যাবে। তো সবার জন্য শুভকামনা ভালো থাকুক সবে, অনেক দূর থেকেও।
শুখি হোক সবে।
বন্ধুত্ব চিরদীন রবে।