গল্প

সব কথা ইশারায়

লেখক আবুল হাসান বাউফলী

অভি : এইযে ( আজ ইশারায় বললো না সরাসরি ভয়েসে বললো ) আমার আম্মু আব্বু তোমাকে দেখতে চেয়েছে। আজকে এই প্রথম অভির কন্ঠে কোনো কথা শুনলো লাবিবা। তাই চমকে উঠলো। ভাবতে লাগলো তাহলে সে বধির অথবা বোবা নয় সে কথা বলতে পারে। লাবিবা অভির দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ভাবনার শহরে হারিয়ে গেলো।
অভি লাবিবাকে ধাক্কা দিয়ে বললো কি হলো শুনছো?
লাবিবাঃ নিত্য দিনের মতোই বললো হুম। কিন্তু কেন?
অভিঃ মনে হয় তোমাকে কোনো কাজ দিবে রেষ্টুরেন্টে তাই।

()ভবিষ্যত()‌‌

বর্তমান
অভিদের নিজস্ব রেস্টুরেন্ট ছিল। রেস্টুরেন্ট টি দেখভাল করতো তার পরিবার। আর অভি খাবার গুলো হোম ডেলিভারি করতো। প্রতিদিনের মতোই আজও ডেলিভারি কাজে বেড়িয়ে পড়লো অভি। কিন্তু ঠিকানার সামনে দারিয়ে লক করলে কোনো সারাশব্দ পেলো না। তাই অনেক্ক্ষণ দাড়িয়ে থেকে বিরক্তিকর ছাপ নিয়ে গেটের ভিতরে ডুকে পড়লো। কিন্তু এটা কোনো বাসাবাড়ি নয় এটা হলো সুইমিংপুল কাটছে মন খুলে স্বচ্ছ পানিতে সাতার। অভি ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলো সেখানের পরিবেশ ও লোকজন।

কিন্তু এক সময় তার নজরে পড়লো ভিন্ন কিছু। দুইটি মে দাড়িয়ে কথা বলছে। কিন্তু একটু আলাদা ভাবে অন্য দশটা মেয়ের থেকে। তাদের ভাষা ছিল ইশারা ও হাত পা নাড়িয়ে। অভি তাদের কাছে গেলো, অভিও তাদের কথা বুঝছিল।

তাই ওখানে দাড়িয়ে দাড়িয়ে মেয়েদের সাথে হাসছিল। অভিকে এভাবে তাদের সাথে হাসতে দেখে লাবিবা আর তার বোন লিয়ানা অবাক হয়ে যায়।

অভির দাদি ছিল বিধির ও বোবা আর ছোটো বেলায় বেশির ভাগ সময় তার সাথেই কাটাতে হয়েছে। অভি সেখান থেকেই এই ইশারায় কথা বলার আইডিয়া ছিল।
অভি তাদেরকে বললো আমি খাবার ডেলিভারি ম্যান এখানে খাবার নিয়ে এসেছি কিন্তু কাউকে পাচ্ছি না তাই ভিতরে এলাম। ইশারায় এগুলো বলে রিসিভ টা দেখালো। লিয়ানা তখন বললো এটা সারের খাবার আমার কাছে দাও আমি দিয়ে আসছি তাই বলে লিয়ানা চলে গেল।

এই একনজর দেখাতেই অভি লাবিবার প্রেমে পড়ে যায়। তার কাছে তার চাহনি, কথা, ও বাচন ভঙ্গি গুলো অভির মন কেড়ে নেয়। কিন্তু কিছু বলছে না শুধু তাকিয়ে দেখতে লাগলো। আসলে প্রেম ভালোবাসার কখা কাউকে বলে দিতে হয়না সেটা ভালো লাগা থেকে হয়। একদম মনের গহীন থেকে হয়। আর হটাৎ করে, সেটার কোনো পূর্বআভাষ থাকে না। আর নিতেও হয়না কোনো প্রস্তুতি।

আমি লেখক কিন্তু কভু কারো প্রেমে পরিনি আর এসব করিনি। তাই একদম ভাবেন অন্য কিছু। মনে হলো প্রেম এরকম তাই লিখলাম। জানি এখানে অনেক অভিজ্ঞ ম্যান আছে কয়েক হালির প্রেমের।
তবে তাদের আমি একটা কথা প্রভু সৃষ্টি করার সময় আমাদের যা দিয়েছেন সবকিছু নির্দিষ্ট। যেমন ধরুন চোখ তার পাওয়ার কমে যায় তাই আমাদের চশমা ব্যবহার করতে হয়। তবে শুধু চোখ নয় প্রত্যেক টি অঙ্গ গুলো।

তাই বলবো ভালোবাসা রোমাঞ্চ অনুভূতি ভাবনা এগুলো ও নির্দিষ্ট আর এগুলোর কোনো ক্ষতি হলে কোনো ঔষধ নেই বা চিকিৎসা, ব্যবস্তা। তাই বলবো যারা শুধু টাইম পাছ করার জন্য ভালোবাসার ছলনা করেন বা একাদিক, গুনে বন্ধুদের সাথে গর্ব করেন কয়েক হালি হয়েছে।
তাদের বলবো একটু খেয়াল করেন যখন আপনি প্রথম প্রেম বা প্রথম কাউকে প্রপোজ করেছেন তখনের অনুভূতি আর দ্বিতীয় জনকে করার অনুভূতি কি এক ছিল। উত্তর আপনাই দিবেন। সবাই জিনিস ই প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় বার অনুভব হয়না।
তাই বলবো আপনার সবকিছু একজনের জন্য রাখুন যে আপনার হবে যেখানে সেখানে একটা ফুল বা দুইটি মিস্টি কথায় ভালোবাসা বিকিয়েন না। মহান পবিত্র ভালোবাসা এভাবে সাময়িক কফি খাওয়ার মতো ভাববেন না করবেন না।
কারন এটা আপনার জীবনে অনেক বড়ো একটা ডিসিশন। এর সাথে শুধু আপনার এই জিবন জড়িত না শুধু সকল ধর্ম অনুযায়ী পরকাল বলে একটা জিবন আছে আর সেখানেও আপনাদের পার করতে হবে দুজনেই। আর জানেনিন তো সে কালের কোনো শেষ নেই।

আমাদের গ্রুপে জয়েন হোন গল্প পাঠক হলে

https://www.facebook.com/groups/255017303245527/

আচ্ছা এবার মুল গল্পে আসি। একসময় লাবিবা সেখান থেকে চলে আসে। তারপর অভি লাবিবার বোন লিয়ানার সাথে কথা বলে ইশারায়। তার থেকে নাম জেনে নেই তার বোনের লাবিবা। তারপর সেও চলে আসে। বাহিরে আসতেই দেখে অনেক মানুষ জড় হয়ে চিল্লাতে লাগলো। অভি সেখানে গিয়ে যা দেখলো তার জন্য একটুও প্রস্তুতি ছিলনা।

দেখলো লাবিবা একটা মাইক্রোর সাথে ধাক্কা খেয়ে মাটিতে পড়ে আছে। অভি তারাতাড়ি তাকে কোলে করে নিকটস্ত একটা ফার্মেসীতে নিয়ে গেলো তেমন ক্ষত হয়নি সামান্য একটু ব্যাথা পেয়েছে। ফার্মেসী থেকে বের হয়ে অভি লাবিবা কে বললো কাল আমি তোমার জন্য খাবার নিয়ে যাব গিফট হিসেবে, আজকে তুমি যাও আবার কালকে দেখা হবে। কিন্তু সাবধানে যাবে।

আজ প্রথম দিনই কি ঘটে গেলো দুজনেই অনেক ফ্রী ভাবে কথা বলছে মনে হয় যুগ ধরে তারা ফ্রেন্ড সার্ভার। লাবিবা ভাবতে লাগলো কেন এমন করছে ছেলেটা কিছুই বুঝতে পারলাম না। আমিতো আর কখনোই দেখিনি তাকে আজ এই প্রথম দেখলাম। আসলে অভির প্রতি লাবিবাও দূর্বল হয়ে পড়ছে। অভি আজকের দিনটা খুব ভালো উপভোগ করছে তার মনে খুব শান্তি ও তৃপ্তি মনে হয় আজ কোনো গুপ্তধনের সন্ধান পেয়েছে। তবে কিন্তু তা পায়নি একটা রাজকুমারী পেয়েছে। অভি লাবিবা কে নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করলো। হাসাতে হাসতে ভাবতে ভাবতে বাসায় গেলো অভি।

অভিকে দেখা মাত্রই তার মা বলে উঠলো ইস দেখোনা রাজপুত্র আসছে সারাদিন পার করে। মায়ের এমন কথায় অভি ভাবনা জগৎ ছেড়ে ফিরে এলো। ওর মা চোখ বড়ো করে ঝাড়ি দিয়ে বললো কিরে নবাবজাদা আজকে মাত্র একটা ডেলিভারি করতে সারাদিন লাগলো বাকিগুলো করবে কে? (আসলে অভির আসতে আসতে দুপুর হয়ে গেছে তখন।)
কিরে কথা বলছিস না কেন?
আম্মু মানে.
মানে আবার কে জানে কি করছিস তুই এতক্ষণ কোথায় আড্ডা দিছিস?
আম্মু কোথাও দেইনি।
দেইনি মানে তাহলে?

অভি কি বলবে তার মাকে ভাবতেছিল। ভেবে চিন্তে বললো আম্মু সাইকেলে একটু সমস্যা হয়ছে তাই দেড়ি হয়েছে।
সাইকেলে সমস্যা মানে আমাকে বলদ পেয়েছিস? আমি কিছু বুঝিনা সাইকেল ঠিক করতে এতো সময় লাগে? সাইকেলের কি অপারেশন হয়েছে হুই?
আচ্ছা মানলাম কিন্তু যেই খাবার গুলো ডেলিভারি করার কথা ছিল এখন সেগুলো কি হবে? তাই বলেই খাবার গুলো এনে সব অভিকে খেতে বললো। এগুলো সব খাবি এটাই তোর শাস্তি। কোনো মতে অভি সেখান থেকে ছুটে এলো তার রুমে। খাটে শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলো লাবিবাকে।

সুইমিং থেকে লিয়ানা ফিরে এসে দেখে তার বোনের হাতে ব্যান্ডিশ করা। অভাক ও আবেগ নিয়ে জিজ্ঞেস করলো কি করে এমন হলো কখন হয়েছে? লাবিবা তাকে বললো চিন্তে করতে হবে না তেমন কিছু হয়নি সামান্য একটু ব্যাথা পেয়েছি রাস্তায় আসার সময়। একজন আমায় হেল্প করেছে তাই কোনো কষ্টই আমার হয়নি।
কে সেই লোকটা?
ঐযে ঐ ডেলিভারি ম্যাম।
ও ঐ ডেলিভারি ম্যান! ছেলেটা খুবই ভালো।

আমাদের গ্রুপে যোগ দিন

https://facebook.com/groups/255017303245527/

পরের দিন আজকে অভির লাবিবার কাছে খাবার নিয়ে যাওয়ার কথা। আজকে অভি ডেলিভারি করতে গেলনা। তার মায়ের দেয়া খাবার গুলো রাস্তায় বিক্রি করতে শুরু করে। বিক্রি করতে করতে একসময় অভি দেখে তার কাছে মাত্র এক বাক্স খাবার আছে কিন্তু লাইনে এখনো অনেক মানুষ। কিন্তু লাবিবার কাছে খাবার নিয়ে যাওয়ার কথা। তাই অভি সবাইকে বলে দিল তার কাছে আর খাবার নেই। অভির কথা শুনে সবাই চলে গেলো কিন্তু মাত্র একজন সে যাচ্ছে না দাড়িয়ে আছে। অভি তার দিকে লক্ষ করে দেখলো সে বোবা ও বধির তাকে ইশারায় বললো খাবার নেই পড়ে সেও চলে যায়।

 

তখনই অবির কাছে কেউ আসছে এরকম পায়ের আওয়াজ পাচ্ছে। অভি পিছনে ফিরে তাকালো তাতেই দেখে।

অভি পিছনে ফিরে তাকাতেই দেখে লাবিবা। অভির দিকে আসছে। অভি খাবারের বাক্স টা লাবিবার কাছে দিলো। লাবিবা খুব মজা করে খেতে ছিল। তারপর তারা একটি গাছের নিচে পাশাপাশি দুজনেই বসে অনেক সময় অনেক রকমের গল্প করলো। সব কথাই তারা ইশারায় বললো। গল্প করার শেষে লাবিবা খাবারের টাকা দিতে চাইলো কিন্তু অভি তাকে ধরে বললো তোমার টাকা দিতে হবে না। আমরা মাঝে মধ্যে অন্যকোনো রেস্টুরেন্টে গিয়ে খেতে পারি। তাও তোমার টাকা দিতে হবে না আমিই শোধ করে দিব।
আচ্ছা লাবিবা কালকে তোমার সময় হবে আমরা কোনো রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাবো।
লাবিবা অনেক্ক্ষণ ভেবে বললো, আমার বিকেলে সময় হবে।
আচ্ছা তাহলে বিকেলেই আমরা দেখা করবো।

তারা দুজনেই চলে গেলো যার যার বাসায় ঐ দিনের জন্য।

পরের দিন বিকেলে ঐ যায়গায় গেলো যেখানে লাবিবার থাকার কথা। কিন্তু লাবিবাকে দেখতে পাচ্ছে না। অনেক্ক্ষণ পড়ে অভি দেখতে পেলো লাবিবা একটা ভাস্কর্য হয়ে দাড়িয়ে আছে। অভি তার কাছে গিয়ে অনেক ডাকাডাকি করলো। কিন্তু লাবিবা কোনো সাড়াশব্দ বা নাড়াচাড়া করলো না। মন খারাপ করে দাড়িয়ে আছে অভি। তখন তার কানে কানে একজন বললো তুমি টাকা না দেয়া পর্যন্ত সে কোনো নাড়াচাড়া করবে না।
লাবিবার সময় অনুযায়ী অভির কাছে লাবিবা এসে বললো,
দারাও আমি এগুলো চেঞ্জ করে আসি। লাবিবার পোশাক ছিল ভাস্কর্যের পোশাক। দুজনেই হাটতে ছিল পাশাপাশি। অভি আজও বললো না যে সে লাবিবাকে ভালোবাসে। আর লাবিবা তেমন কিছুই ভাবেনি অভিকে নি শুধু বয়ফ্রেন্ড হিসেবে নিয়েছে।

তারপর তারা একটি রেস্টুরেন্টে ঢুকলো খাবার শেষে আজও বিল পরিশোধ করার জন্য লাবিবা টাকা বের করলো আর সেগুলো ছিল সব পয়সা। আর সেগুলো গুনতে লাগলো। লাবিবার কান্ড দেখে অভি বিরক্ত বোধ করলো আর অভি জোর করে বিল পরিশোধ করলো।
লাবিবাকে বিল পরিশোধ করতে না দেয়ায় খুব কষ্ট পেলো রাক করে চলে আসছিল। অভি পিছন থেকে ডাকছে কোনো সাড়াশব্দ দিচ্ছে না।
অভি দৌড়ে এসে লাবিবার সামনে দু’কান ধরে বললো সরি সরি ক্ষমা করো ভুল হয়েছে। লাবিবা বললো কেন তুমি আমায় বিল দিতে দিলে না? ওগুলো পয়সা ছিল তাই বলে কিন্তু ওগুলোও তো টাকা, একি মান আর ওগুলো আমার কষ্টের ছিল।

 

আচ্ছা সরি বলছিতো ক্ষমা করো।
ওকে আজকে করলাম কিন্তু আর করবোনা। আমার সময় নেই বাসায় যেতে হবে। লাবিবা চলে এলো। হাটতে হাটতে বাসার সামনে আসে। তার বাসার সামনে অনেক লোক জড় হওয়া। তাই দেখে ভয় পেলো দৌড়ে তাদের সামনে আসলো। এসে দেখে ঘড়ের দরজা ভাঙা। একজন এসে বললো তোমার ঘরে আগুন লেগেছে তোমার বোন আহত হয়েছে তাকে হসপিটালে নেয়া হয়ছে। কথাটা শুনতে পেই মনে হলো তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেল। কি করবে বুঝতে পারছেনা।

লাবিবার মা বাবা কেউ বেচে নেই। এই পৃথিবীতে শুধু দুটি বোনই বেচে আছে। লাবিবা ছোটো বোন লিয়ানা তার বড়ো। লিয়ানা প্রতিবন্ধী কানে শোনে না, কথা বলতে পারে না। লিয়ানা একটা প্রতিবন্ধী প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল সুইমিং করতে হবে তাই সুইমিং শিখছিল। লাবিবা হসপিটাল গেল খুব খুশি হয়ছে তার বোনকে জীবিত দেখে। জড়িয়ে ধরে কেদে দিল। বোন কি ভাবে হলো এসব। লিয়ানা তখন বলতে লাগলো আজ সুইমিংপুল থেকে আসার সময় তোকে দেখলাম না তাই একা একা চলে এলাম। বাসায় এসে আমার খুব খিদে পেয়েছে তাই খাবার গরম করি কিন্তু খাবার চুলায় রেখে আমি ঘুমিয়ে পড়ি তাই আগুন লেগেছে বাসায়। লাবিবা আরো জোড়ে কান্না করতে লাগলো। নিজেকে অপরাধী ভাবতে লাগলো আজ যদি সে অভির সাথে দেখা না করতো তাহলে এমন কিছুই ঘটতো না। অভির প্রতি তার প্রচন্ড রাগ হয়েছে। ভাবছে আর অভির সাথে কোনো সম্পর্ক রাখবে না।

হসপিটালে তিনদিন কেটে গেলো দুই বোনের।

অভি এই তিনদিন লাবিবাকে না দেখতে পেয়ে পাগলের মতো ছটফট করতে লাগলো প্রতিদিন তার জন্য সুইমিংপুল এর ওখানে বসে বসে অপেক্ষা করতো লাবিবার জন্য। লাবিবার ফোন নম্বর ও তার কাছে নেই যে ফোন দিবে। হটাৎ দেখতে পেলো লাবিবা আর লিয়ানা আসছে অভি পাগলের মতো দৌড়ে তাদের কাছে গিয়ে বললো তুমি এতদিন কেন আসনি? কি হয়েছিলো তোমার? কিন্তু কোনো কথার উত্তর দিচ্ছে না, মনে হয় যেন দেখছেই না তাকে। অভি দাড়িয়ে রইলো কি হলো তার ভাবতে লাগলো। লিয়ানাকে সুইমিং পুলে রেখে লাবিবা চলে গেলো। অভি এবার লাবিবার বোন লিয়ানার কাছে গেলো তাকে আবেগময় ভাষায় জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে লাবিবার! লিয়া না ইশারায় বললো ওর কেন যেন মন খারাপ, তুমি চিন্তে কারো না ঠিক হয়ে যাবে। লিয়ানার থেকে লাবিবার মন খারাপের কথা জানতে পেরে অভির মনটাও খারাপ হয়ে গেছে।

অভিও ফিরে এলো।

বিকেল বেলা অভি লাবিবার জন্য গিফট নিয়ে গেলো লাবিবার বাসায়। অভি কয়েকবার কলিংবেলের সুইচবোর্ডে চাপার পড়েও দরজা খুললো না লাবিবা। শুধু তাকিয়ে দেখতে লাগলো। অভি তার জন্য যে গিফট টা এনেছিল সেটা রেখে চলে এলো।

 

অভি চলে আসার পড়ে লাবিবা লাবিবা গিফট টি খুলে, খোলার পড়ে দেখতে পেলো একটা টয় আর ঐ টয়কে ছুতেই বলে!!!!!!! তুমি অভিমান করেছো????

টয়ের কথা শুনে লাবিবা হেসে দিল।

অভি বাসায় এসে অন্য মনস্ক হয়ে রয়েছে। তার বুক ফেটে যাচ্ছে। শুধুই হারিয়ে যাচ্ছে ভাবনার শহরে। কেন অভিমান করেছে লাবিবা? যদিও তাকে বলেনি ভালোবাসি তবুও কিন্তু অনেক ভালোবাসে।

লিয়ানা বুঝতে পেরেছে অভি লাবিবাকে ভালোবাসে আর লাবিবা ও কিছুটা হলে অভিকে ভালোবাসে। তাই আজ সুইমিং পোল থেকে লাবিবাকে আগে পাঠিয়ে দিল লিয়ানা। কারণ নলিয়ানার কথা চিন্তে করেই লাবিবা অভির থেকে দূরে যেতে চাচ্ছে। লিয়ানা বাসায় এসে শুয়ে পড়লো। লাবিবা ডাকছে খাবারের জন্য, কিন্তু খেতে আসছে না। এক সময় বলেই উঠলো কেন তুমি আমার জন্য নিজের স্বপ্ন ভেঙে ফেলছো? আমি জানি আমি অভিশপ্ত এক বোন। আমি তোমার বড়ো হয়েও তোমার জন্য কিছু করতে পারছিনা।
মানে তুমি আজ এমন কথা বলছো কেন? আমিতো তোমার বোন তার জন্যই তো তোমায় আমি ভালো বাসী।
আমি জানি তুমি আমার জন্যই ছেলেটার সাথে ব্রেকআপ করতে চাচ্ছো। বলো ছেলেটার কি দোষ?

লাবিবা হতভম্ব হয়ে বললো আসলে আফু ওর সাথে এরকম কিছুই হবে না কারণ ও কথা শুনতে ও বলতে পারেনা তাই।
তাই? বলতে ও শুনতে পারেনা তাই বলে তাকে ভালোবাসা যাবে না? তার কি ভালোবাসার কোনো অধিকার নেই? তাহলে আমায় ভালোবাসো কেনো আমিও তো বলতে ও শুনতে পারিনা।

দু বোনের চোখ থেকেই অশ্রু ঝরছে। কিছুক্ষন এ ভাবেই কেটে গেলো রজনী।

আজ কয়েকদিন কেটে গেলো অভি মন মরা। মুখে কোনো হাসি নেই বলছে না কারো সাথে কথা। এভাবে দেখতে মন চাচ্ছিল না অভিকে অভির মা বাবার।
অভি ছাদে বসে আছে দোলনায় আর দেখছে সূর্যের মিষ্টি হাসি। তখনই পিছন থেকে বলে উঠলো তোমায় আর পুড়তে হবে না ভালোবাসার উনুনে। আমরা সন্তানের মনের কথা বলতে পারি সে কি চায়। তুমি শুধু একবার বলো কোন রূপবতী তোমার মন চুরি করেছে। ঐ রুপের পরিকে তোমায় এনে দিব সারা জীবনের জন্য।

সত্যি বলছো আম্মু? হ্যা সত্যি বলছি তুমি শুধু একবার বলো।

অভি তারাতাড়ি করে দৌড়ে সুইমিং পোলে গেলো সেখানে দেখতে পেলো লাবিবাকে। পিছন থেকে ডাক দিয়ে বললো আমার আম্মু তোমায় ডাকছে আমার সাথে চলো।

আজকে আর ইশারায় বললো না সরাসরি ভয়েসে বলছে। এই প্রথম অভির কন্ঠে কথা শুনে লাবিবা হতভম্ব হয়ে হারিয়ে গেলো ভাবনার শহরে। তাহলে সে বধীর নয় সে বোবা নয় সেও কথা বলতে পারে। ভাবতে লাগলো অবাক দৃষ্টিতে অভির দিকে তাকিয়ে।

অভি লাবিবাকে ধাক্কা দিয়ে বললো কি হলো শুনছো?
লাবিবা নিত্য দিনের মতো আজো ইশারায় বললো হুম । তখনই পিছন থেকে বলে উঠলো তাহলে এই হলো সে যে আমার ছেলের রাজ্যের রাণী হবে। অভির পিছনে অভির মা ও আসছিল ।

খাতায় লিখে লাবিবা কে বলতে লাগলো। আমাদের ও পছন্দ হয়ছে তোমাকে। আমাদের ছেলে অনেক ভালো ও ভদ্র, পরিশ্রমী সে তোমায় অনেক ভালো বাসে। অভি তোমাকে অনেক ভালোবাসে তুমি কি অভিকে ভালোবাসো? কিছু ভেবে চিন্তে না করেই উত্তরে মুখ খুলে মিষ্টি কন্ঠে বলো হুম আমিও তাকে অনেক ভালোবাসি।

অভি; অবাক হয়ে তু তুমি কথা বলতে পারো?
হ্যা আমি কথা বলতে পারি।
তাহলে এতদিন কেন বলনি?
তুমি তো প্রথম দেখায় আমার সাথে ইশারায় কথা বলছিলে তাই ভাবছিলাম তুমি কথা বলতে পারো না তাই বলিনি।

অতঃপর তারা দুজনেই দুজনকে জড়িয়ে ধরলো কিছুক্ষণ ধরে। আর কয়েকদিন পড়েই তাদের বিয়ের কার্যক্রম শুরু হয়ে গেলো।
“””” ডায়রীর পাতাও শেষ গল্প ও শেষ “”

 

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button